শায়েখ আহমদ হাসান আবুল-খায়ের আল-মিসরী (রহিমাহুল্লাহ)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

শায়েখ আহমদ হাসান আবুল-খায়ের আল-মিসরি নামে পরিচিত, শায়েখ আব্দুল্লাহ রজব আব্দুল রহমান, মিশরের কাফ্রেল-শাইখে ১৯৫৭ সালের ৩রা নভেম্বরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি মিশরীয় আল-কায়েদার সিনিয়র ব্যক্তিত্ব ছিলেন; তিনি পূর্বে আইমান আল-জাওয়াহিরী এবং তাঁর সিনিয়র সহযোগীর ডিপুটি ছিলেন(তবে শায়েখ আবুল-খায়ের ঐ সময়ে আল-কায়েদার জেনারেল ডিপুটি ছিলেন না যেভাবে মিডিয়া প্রচার করেছিল )। তিনি মিশরের “জামা’আত আল-জিহাদ”-এর একজন সিনিয়র সদস্য ছিলেন এবং আফগানিস্তানে জিহাদ শুরু করার উদ্দেশ্যে অন্যান্য অনেক ভাইদের সঙ্গে ১৯৮০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মিশর ত্যাগ করেছিলেন, যাতে মুসলিমদের উপর সোভিয়েত কমিউনিস্টদের চালানো গণহত্যার বিরুদ্ধে মুসলিমদেরকে সাহায্য করতে পারেন। ৯০’র মধ্যবর্তী সময়ে, বসনিয়ান জিহাদ চলাকালীন অনেক আরব মুজাহিদদের সাথে থেকে তিনি বলকানে যুদ্ধ করেছিলেন। “আলবেনিয়া থেকে প্রত্যাগমনকারী”-দের  ঘটনায় ১৯৯০ সালে মিশরের শহরগুলোতে একটি সিরিজ জিহাদী অপারেশনের দায়বদ্ধ হওয়ার অভিযোগে, তিনি ১৯৯৮ সালে মিশরে তাঁর অনুপস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন । তিনি আল-কায়েদা শুরা কাউন্সিলের একজন সদস্য ছিলেন। ঐ সময়ে আল-কায়েদার আমীর শায়খুল মুজাহিদ আইমান আল-জাওয়াহিরীর একজন ‘বিশ্বস্ত প্রতিনিধি’ হিসেবে তিনি অপারেটিং নামে অভিহিত হয়েছিলেন। তিনি বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ছিলেন এবং এটি কথিত আছে যে ১৯৯৮ সালে কেনিয়া এবং তানজানিয়াতে আমেরিকান দূতাবাসে বোমাহামলার অপারেশনে তিনি যুক্ত ছিলেন। বরকতময় ৯-১১ হামলার পর এবং আফগানিস্তানে আমেরিকান ক্রুসেডারদের আক্রমণের পূর্বেই তিনি আফগানিস্তান ত্যাগ করেছিলেন। অনেক সিনিয়র মুজাহিদদের সাথে তিনি  ইরান চলে গিয়েছিলেন, সেখানে ২০০৩ সালের এপ্রিলে সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁর পাশাপাশি কমান্ডার সাইফ আল-আদেল, শায়খ আবু মুহাম্মদ আল-মিসরি এবং শায়খ সুলাইমান আবু ঘাইথসহ আল-কায়েদার অন্যান্য সিনিয়র নেতাগণও গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০১০ সালের আগস্টে, কার্যনির্বাহী আদেশ ১৩২২৪ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের  বিশেষভাবে আখ্যায়িত গ্লোবাল সন্ত্রাসীদের তালিকায় শায়খ আবুল-খায়েরের নাম সংযুক্ত হয়েছিল। একই সময়ে, আল-কায়েদা এবং তালেবান লোকদের জন্য জাতিসংঘের অনুমোদিত ১২৬৭ জনের তালিকায়ও শায়েখ আবুল-খায়েরের নাম সংযুক্ত হয়েছিল। যখন তিনি সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, রাজস্ব-বিভাগ শায়খ আবুল-খায়েরকে “ সন্ত্রাসী সংগঠনের অর্থবিভাগের একজন মুখ্য নেতা” হিসেবে অভিহিত করেছিল যিনি “মিডিয়া কমিটিতেও একজন নেতার ভূমিকায় আল-কায়েদার জন্য কাজ করেন।”  শায়েখ আবুল-খায়ের মোস্ট ওয়ান্টেড (MOST WANTED) ৮৫ জন সন্ত্রাসীর তালিকায়ও ছিলেন, যে তালিকাটা সৌদি আরবের তাগুত সরকার কর্তৃক ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল । ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই সংবাদ জানানো হয়েছিল যে, ইরান ২০১৫ সালের মার্চে সাইফ আল-আদেল এবং আব্দুল্লাহ আহমেদ আব্দুল্লাহকেসহ অন্যান্য আল-কায়েদা নেতাদের সাথে শায়েখ আবুল-খায়ের আল-মিসরিকেও মুক্তি দিয়েছে, তাঁরা পারস্যের এক কূটনীতিবিদের মুক্তির বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছিলেন যাকে ইয়েমেনে আল-কায়েদার জাজিরাতুল আরব শাখার মুজাহিদরা অপহরণ করেছিলেন।  ২০১৬ সালের মধ্যসময়ে, শায়েখ আবুল-খায়ের সিরিয়াতে চলে গিয়েছিলেন, আর রিপোর্ট এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় ইদলিব প্রদেশের মাসটৌমাতে গতকাল তিনি নিহত হয়েছেন। যদি এটি সত্য হয়, আল্লাহ তাঁকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন, আর যে বিশ্বাসঘাতক তাঁকে ক্রুসেডারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল তাকে শাস্তি দিন। 

I BUILT MY SITE FOR FREE USING